জাফরানি শরবত
দুধের শরবত একটি অতি প্রাচীন পানীয়। আর জাফরানি শরবত মুসলিম সভ্যতার জন্য তুর্কি, ইরান থেকে শুরু করে সমগ্র উপমহাদেশের সব জায়গায় অতিথি আপ্যায়নে দুধের শরবতকে উৎকৃষ্ট পানীয় মনে করা হয়। উৎসব বা সাধারণ অতিথিদের কেউ দুধের শরবতি আপ্যায়নের রীতি দেখা যেত ঢাকায়। দুধের জাফরানের শরবতের প্রচলন ছিল খাঁটি গরুর দুধের সাথে পোস্ত দানা, কেওড়াজল, চিনি ও জাফরানের সংমিশ্রণে তৈরি হতো এই শরবত। এখন যেমন বিবাহ উৎসবে ঠান্ডা পানীয় হিসাবে কোক, সেভেন আপ ইত্যাদি প্রচলন রয়েছে, ঠিক তেমনি তখন ঢাকায় ভোজের পর অতিথিকে দেওয়া হতো জাফরানি শরবত। তবে বিবাহের বর কনেকে এই শরবত খাওয়ানোর রীতি এখনো টিকে আছে।
বাজারের রং দেয়া শরবত খেয়ে স্বাস্থ্যহানি না করে বাড়িতেই বানান জাফরানি মজাদার শরবত।
দুধ, বাদাম ও জাফরানে তৈরি এই দারুণ পুষ্টিকর শরবত সারাদিন পরিশ্রমের পর প্রাণ তো জুড়াবেই, সাথে স্বাস্থ্যটাও রক্ষা করবে।
আর ত্বকের উজ্জ্বল বর্ণের জন্য তো জাফরান অদ্বিতীয়। মোট কথা সর্বোৎকৃষ্ট মানের পুষ্টিকর পানীয় এই Saffron + Milk + Almond.
ঘরেই খুব সহজে তৈরি করে নিন জাফরানি শরবত। এ শরবতে ব্যবহৃত সব উপাদনই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সারাদিন রোজা রাখার পরে এ শরবত একবার খেলে আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি মিলবে একসঙ্গে।
মাত্র ৫ উপাদান দিয়েই তৈরি করে নেওয়া যায় সুস্বাদু এ শরবত। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক রেসিপিটি…
উপকরণ
১. দুধ ১ লিটার
২. জাফরান কয়েকটি (২ চামচ দুধে ভিজিয়ে রাখতে হবে)
৩. বাদাম ২০-২৫টি
৪. চিনি পরিমাণমতো
৫. এলাচ গুঁড়ো আধা চা চামচ
পদ্ধতি
১০ মিনিটের জন্য বাদাম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর বাদামের খোসা ছড়িয়ে এক কাপ দুধের সঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। একেবারে মসৃণ পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে।
এবার একটি প্যানে দুধ গরম করে নিতে হবে। দুধ যখন ফুটে উঠবে; তখন বাদামের পেস্ট এবং দুধে ভেজানো জাফরান মিশিয়ে দিতে হবে।
হালকা আঁচে দুধ ২০-২৫ মিনিট ধরে জ্বাল দিতে থাকুন। এবার চিনি এবং এলাচ গুঁড়ো দিয়ে আরও মিনিটখানেক রান্না করুন।
তৈরি হয়ে গেল জাফরানি শরবত। নামিয়ে ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দিন। পরিবেশনের সময় বাদাম কুচি ও জাফরান গ্লাসের উপরে ছড়িয়ে দিতে ভুলবেন না!
ইফতারের আগে পরিবেশন করে পরিবারের সবার সঙ্গে উপভোগ করুন ঠান্ডা ঠান্ডা সুস্বাদু জাফরানি শরবত।